লিমিটেড/পার্টনারশিপ কোম্পানি RJSC নিবন্ধন
একাধিক উদ্যোক্তা মিলে কোনো ব্যবসা দাঁড় করানোর সময় প্রশ্ন আসে প্রতিষ্ঠানটি কি যৌথ কারবার বা পার্টনারশিপের অধীনে নাকি কোম্পানির অধীনে পরিচালিত হবে? বিষয়টির সমাধানে কোম্পানি ও যৌথ কারবারের তুলনামূলক আলোচনা হওয়া প্রয়োজন।
ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানের কাঠামো সাধারণত তিন ধরনের_ ব্যক্তি মালিকানাধীন ব্যবসা (প্রোপ্রাইটরশিপ), যৌথ কারবার (পার্টনারশিপ) এবং কোম্পানি। কোনো ব্যবসায়িক কারবারে যখন একজন মাত্র মালিক থাকেন, তখন ব্যক্তি মালিকানাধীন ব্যবসা বা প্রোপ্রাইটরশিপ গঠন করা হয়। ব্যবসায়ে একাধিক মালিক থাকলে গঠন করা হয় যৌথ কারবার (পার্টনারশিপ) কিংবা কোম্পানি। এখন একাধিক মালিকানার ক্ষেত্রে কখন যৌথ কারবার আর কখনো বা কোম্পানি গঠন করা যেতে পারে? কোনোটি তুলনামূলকভাবে বেশি সুবিধাজনক? বিষয়টির সাদামাটা জবাব দেয়া কঠিন। আপনার ব্যবসায়িক কারবার কোম্পানি নাকি যৌথ কারবারের অধীনে পরিচালনা করবেন, বিষয়টিতে সিদ্ধান্ত নেয়ার জন্য কোম্পানি ও যৌথ কারবারের মধ্যকার পার্থক্যগুলো বুঝে নেয়া প্রয়োজন। এ পর্যায়ে পার্থক্যগুলো দেখে নেয়া যাক।
১. সদস্য সংখ্যা
আইন অনুসারে, যৌথ কারবারে সর্বনিম্ন দুজন আর সর্বোচ্চ ২০ জন অংশীদার নেয়া যায়। তবে যৌথ কারবারটি যদি ব্যাংক ব্যবসার জন্য প্রতিষ্ঠা হয়ে থাকে, সে ক্ষেত্রে সর্বোচ্চ ১০ জন অংশীদার অনুমোদিত। আর কোম্পানির ক্ষেত্রে শেয়ারহোল্ডারের সংখ্যা কত হবে সেটি নির্ভর করে কোম্পানিটি কোন প্রকৃতি তার ওপর। কোম্পানিটি যদি হয় প্রাইভেট লিমিটেড কোম্পানি, সে ক্ষেত্রে শেয়ারহোল্ডারের সংখ্যা নূ্যনতম দুই ও সর্বোচ্চ ৫০ জন হবে। আর পাবলিক লিমিডেট কোম্পানির ক্ষেত্রে সদস্য সংখ্যা হবে নূ্যনতম ৫০ জন। এ ক্ষেত্রে সর্বোচ্চ সীমা টেনে দেয়া হয়নি।
২. পৃথক আইনি সত্তা
যৌথ কারবারের পৃথক কোনো আইনি সত্তা নেই। অথচ কোম্পানির এই পৃথক সত্তা আছে। এ কারণে কোম্পানিকে ‘কৃত্রিম আইনি ব্যক্তি’ বলা হয়ে থাকে। কোম্পানির সদস্যদের বাইরেও কোম্পানির আলাদা ও নিজস্ব আইনি সত্তা থাকে বলে কোম্পানি যে কারও বিরুদ্ধে নিজ নামে মামলা করতে পারে এবং কোম্পানির বিরুদ্ধেও মামলা করা যায়।
২. দায়
যৌথ কারবারে প্রত্যেক অংশীদারকে অসীম দায় গ্রহণ করতে হয়। এ কারণে অংশীদাররা তাদের কারবারের সকল দায়ের জন্য প্রত্যেকে ব্যক্তিগতভাবে দায় নিয়ে থাকেন। যৌথ কারবারের সঙ্গে লেনদেন করা কোনো ব্যক্তি তার আর্থিক দাবি যে কোনো একজন অংশীদার থেকেই পুরোটা আদায় করার জন্য দাবি জানাতে পারেন। অন্যদিকে, কোম্পানির ক্ষেত্রে শেয়ারহোল্ডাররা একেবারেই সীমিত দায় গ্রহণ করে থাকেন। তারা যতটুকু মূলধন বিনিয়োগ করেছেন কোম্পানিতে, তাদের দায় কেবল ততটুকু অর্থ পর্যন্তই সীমাবদ্ধ থাকে। কোনো কোনো কোম্পানিতে আবার দায় নির্ধারিত হয় গ্যারান্টি দ্বারা, যেখানে শেয়ারহোল্ডারার মূলধনের পরিবর্তে নির্দিষ্ট পরিমাণের একটি অর্থ নির্ধারণ করে নেন, যতটুকু পর্যন্ত তারা দায় গ্রহণ করবেন।
৪. ব্যবস্থাপনা
যৌথ কারবারে সব অংশীদারই ব্যবস্থাপনার দায়িত্বে সাধারণত নিয়োজিত থাকেন। তবে কখনো কখনো কোনো কোনো অংশীদারকে ‘নিষ্ক্রিয় অংশীদার’ হিসেবে রাখা হয়। সে ক্ষেত্রে নিষ্ক্রিয় অংশীদার যৌথ কারবারের ব্যবস্থাপনায় অংশ নেন না। একই বিধান নাবালক অংশীদারের ক্ষেত্রেও প্রযোজ্য হয়ে থাকে। পক্ষান্তরে কোম্পানির ব্যবস্থাপনার দায়িত্বে থাকেন বোর্ড অব ডিরেক্টরস, যারা কোম্পানির শেয়ারহোল্ডারদের ভোটে নির্বাচিত হয়ে থাকেন।
৫. স্বার্থ হস্তান্তর
যৌথ কারবারের কোনো অংশীদার সব অংশীদারের সম্মতি ছাড়া ব্যবসায়ের কোনো স্বার্থ অন্যত্র হস্তান্তর করতে পারেন না। একজন অংশীদার তার নিজের অংশটুকু অন্য কারও জন্য বরাদ্দ করে যেতে পারেন বটে, কিন্তু বরাদ্দপ্রাপ্ত ব্যক্তিটি কেবল উপকারভোগী হিসেবে সাব্যস্ত হবেন, যৌথ কারবারে একজন অংশীদার হিসেবে গণ্য হবেন না, যতক্ষণ না সব অংশীদার তাতে সম্মতি দেন।
পক্ষান্তরে প্রাইভেট কোম্পানির ক্ষেত্রে একজন শেয়ারহোল্ডার বোর্ড অব ডিরেক্টরসের অনুমতি ছাড়া তার শেয়ার অন্যত্র হস্তান্তর করতে পারেন না। তবে পাবলিক লিমিটেড কোম্পানিতে শেয়ারহোল্ডার তার শেয়ার বিক্রির জন্য কারও অনুমতির ওপর নির্ভরশীল নন। যার কাছে তিনি শেয়ার বিক্রি করছেন, সেই ব্যক্তি শেয়ারহোল্ডারের যাবতীয় সুযোগ-সুবিধা ভোগ করবেন।
৬. হিসাব নিরীক্ষণ
কোম্পানির ক্ষেত্রে প্রতিবছর হিসাব নিরীক্ষণ করিয়ে নেয়া জরুরি। তবে যৌথ কারবারের ক্ষেত্রে বার্ষিক নির্ধারিত টার্নওভার অতিক্রম করলে তবেই হিসাব নিরীক্ষণ করা জরুরি হয়।
৭. নিবন্ধন
নিবন্ধন ছাড়া কোম্পানি পরিচালনা করা যায় না। জয়েন্ট স্টক কোম্পানিজ অ্যান্ড ফার্মস (RJSC) থেকে এই নিবন্ধন নিতে হয়।
৮. নূন্যতম পরিশোধিত মূলধন
যৌথ কারবারের ক্ষেত্রে নূ্যনতম পরিশোধিত মূলধনের কোনো বাধ্যবাধকতা নেই। আমাদের দেশে এখন পর্যন্ত কোম্পানি গঠনের ক্ষেত্রেও নূ্যনতম পরিশোধিত মূলধনের বাধ্যবাধকতা নেই। তবে ভারতে কোম্পানি গঠনের ক্ষেত্রে এ ধরনের মূলধনের বাধ্যবাধকতা রয়েছে।
প্রয়োজনীয় ডকুমেন্টস সমুহঃ
- সকল ডিরেক্টরের জাতীয় পরিচয়পত্র ও টিন সার্টিফিকেট
- সকলের পাসপোর্ট সাইজের ৫ কপি করে ছবি
- প্রতিষ্ঠানের বাণিজ্যিক ঠিকানা
আমরা পার্টনারশিপ/লিমিটেড/ প্রোপাইটারশিপ কোম্পানি রেজিস্ট্রেশন করতে সহায়তা প্রদান করি।
খরচঃ
- সার্ভিস চার্জঃ 6,000/- টাকা (সরকারী ফি ব্যতিত)